ভালোবাসার চিঠি ও ডাকবাক্স

দিঘল ঘুম থেকে জেগে উঠলাম আমি। কত দিন ঘুমিয়ে ছিলাম আমি জানি না। বহুদিন আমার কাছে কেউ আসেনি, অথবা এসেছিল কি না, ঘুমের ঘোরে একযুগ নাকি তারও বেশি সময় কেটেছে সে কথা মনে করতে পারছি না।

কেউ একজন আমাকে আজ জাগিয়ে দিয়েছে। পরিচিত কারও কর-স্পর্শে আমার ঘুম ভেঙেছে। কে আমাকে স্পর্শ করেছে? কেন জাগিয়েছে?

ঘুম ভাঙলে আমি পরিচিত কাউকেই খুঁজি। কেন খুঁজতে থাকি বুঝতে পারি না। এমন কে আছে আমার পরিচিত? কেউ কি ছিল? মনে করতে পারি না। আমি চারদিকে তাকাই। কিন্তু আমার প্রতিবেশে আমি আর চিনতে পারি না। সব কিছুই অচেনা, নতুন ঠেকে। যেন আমি এখানকার কেউ নই, কখনোই ছিলাম না। অথচ এটা জানি আমি এখানেই ছিলাম, আজও আছি। এখান থেকে কেউ আমাকে সরিয়ে নেয়নি। 

আমি আমার চেনা সেই ফুটপাত খুঁজি। রাস্তাটার বুকে চোখ রাখি, সেই ছোট রাস্তাটা খুঁজি যার বুকে রিকশাগুলো ছুটে চলত টুংটাং ঘণ্টি বাজিয়ে। ফুটপাত দিয়ে আমাকে পাশ কাটিয়ে ফেরিওয়ালা হাঁক দিয়ে দিয়ে লোকালয়ের ভেতর হেঁটে যেত। ছোট ছেলেমেয়েরা কোলাহল করে করে স্কুলের দিকে যেত। আমি তাকিয়ে তাকিয়ে সব দেখতাম। আমার তো আর দেখা ছাড়া কিছু করার ছিল না। 

পথটা আছে পথের জায়গায়। কিন্তু এটা যেন সেই পথ নয়। আজ এ পথে অনেক গাড়ি চলছে। অনেক ভিড় পথে। পথের পাশের বাড়িঘর ফসলের জমি বদলে গিয়ে গড়ে উঠেছে বড় বড় দালান। আমি যে বসতিকে চিনতাম এ তো সেই বসতি নয়, সেই লোকালয় নয়। বদলে গেছে সব কিছু। 

আমি নিজের দিকে তাকাই। আমি নিজের মলিন ধূলিমাখা দেহটা দেখতে পাই। শরীরটা আগের মতো যেন নেই। বুঝতে পারি, একঘুমে বার্ধক্যে পৌঁছে গেছি। আমি জানি, আমি সেই রূপকথার রাজকুমার নই যে অনেক বছর পর কালঘুম থেকে জেগে উঠেছিল তার তারুণ্য নিয়েই। 

সহসা গাছটার কথা আমার মনে পড়ে। যখন আমাকে এখানে বসানো হয়েছিল তখন আমার পাশে একটা বটের চারা রোপণ করা হয়েছিল এই ভেবে যে, একদিন ওটা বড় হবে, ডালপালা মেলবে, পথিককে ছায়া দেবে। আমি দেখতাম দু-একজন আমার কাছে চিঠি রেখে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ভাবত। একজনের কথা তো আমি কখনো ভুলতে পারব না। 

আমি মুখ তুলে মাথার উপরে তাকাই। দেখতে পাই আমার গা ঘেঁষে একটা বটগাছ অনেক ডালপালা মেলে দাঁড়িয়ে আছে। ফুটপাত আর পথের উপর ছায়া দিয়ে রেখেছে। বুঝতে পারি এটাই সেই চারাগাছ, আজ মহিরুহ।

আমার মনে পড়ে, রোপিত বটের চারাটা আমার খুব আপন ছিল। সে ছাড়া আমার আপন কেউ ছিল না। আসলে আমরা বন্ধু ছিলাম। বাতাসে চারাগাছটার মাথা আমার মাথার কাছে নুয়ে আসত। এর শাখা আর পাতা আমাকে আদর করে দিত। আমি তাতে পুলকিত হতাম। একদিন কে যেন আমার সঙ্গেই গাছটাকে একটা রশি দিয়ে বেঁধে দিয়েছিল। গাছটা বাতাসে যাতে ভেঙে না যায় সে জন্য। সে বাঁধন ছিল আমাদের দু-জনের অন্তরের গাঁটছড়া। গাছটাকে আরও কাছে পেয়ে আমার আনন্দ আর ধরে না। কিন্তু সুখের দিন বুঝি আসলেই স্থায়ী হয় না। 

এখানে আমার ঠাঁই হবার পর কয়েক বছরের মধ্যেই এ তল্লাটে অনেক নতুন বাড়িঘর গড়ে উঠছিল। কিন্তু আমার ধারণা ভুল প্রমাণ করে যত দোকানপাট তৈরি হচ্ছিল, বাসিন্দাও বাড়ছিল তত চিঠি নিয়ে লোকজনের আমার কাছে আসা কমে যাচ্ছিল। প্রথম দিকে প্রতিদিনই ডাকহরকরা এসে আমার পাঁজরের কবাট খুলে চিঠি বের করে থলে ভরে নিয়ে যেত। পরের দিকে দু-একদিন পরপর, একসময় সপ্তাহে একবার এসে চিঠি নিয়ে যেত। শেষের দিকে দু'চারটা মাত্র চিঠি পেত। লোকজনের চিঠি লেখা কেন কমে যাচ্ছিল আমি জানতাম না। সেটা আমার জানার কথাও ছিল না। এমনকি যে ডাকহরকরা আমার বুকের ভেতরটা খুলে চিঠি নিতে আসত সেও এর কারণ জানত বলে আমার মনে হয় না। একদিন সেই ডাকহরকরা আমার কাছে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিল। যাওয়ার আগে দীর্ঘশ্বাস ফেলেছিল। কিন্তু কিছু বলে যায় নি। 

এর পর আমার কাছে লোক আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বলতে পারতাম যদি না একটা লোক তখনো নিয়মিতই আসত। এতদিন কে আসে, কে চিঠি ফেলে আমি ভাবিনি। লোকটাকে আমি তেমন করে খেয়াল করিনি। যখন আর তেমন কেউ না এলেও নিয়মিতভাবে সে আসতে থাকে তখন আমি তার দিকে খেয়াল করি। তাকে আমার আপনজনের মতো মনে হতে থাকে। আমি রোজ তার প্রতীক্ষায় থাকতাম। পথ চেয়ে থাকতাম। সেসব দিনে তার আসায় আমার খুব ভালো লাগত। আর কেউ না এলেও সে রোজ আসত। আমার বুকে তার ভালোবাসা জমা রেখে খুশি হয়ে সে ফিরে যেত। সে চলে গেলে আমি তাকে নিয়ে ভাবতাম। আমি কল্পনায় দেখতে পেতাম একটা যুবক কাগজ কলম নিয়ে জানলা সামনে নিয়ে বসে আছে। তার মনের ভেতরের রঙের খেলা আমি যেন দূরে দাঁড়িয়ে থেকেও টের পেতাম।

কাগজের বুকে কলমের কালিতে তার ভালোবাসা এঁকে হলুদ খামে পুরে প্রতিদিন আমার কাছে রেখে যেত। আমার কাছে ভালোবাসা রেখে দিয়ে নিশ্চিত হতো। কোনো কোনো দিন আমার বুকের ভেতর তার ভালোবাসা রেখে গাছের তলেও খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকত। আমি বুঝতে পারতাম তার মনে কী আছে। গাছ তাকে ছায়া দিত। ডালপালা নাড়িয়ে বাতাস দিত। গাছও যেন তার মনের কথা বুঝতে পারত।

আমি লোকটাকে বলতাম, তুমি এত ভালোবাস? 

লোকটা কিছু বলত না, কেবল হাসত। 
আমি বলতাম, তোমার ভালোবাসা সে পায়, তুমি তার ভালোবাসা পেয়েছ তো? 
লোকটা বলত, একদিন না একদিন ঠিক পাব।
কখন?দেখো, একদিন পাবই। সে আমাকে ভালোবাসবেই।

আমি কখনো জানতে পারিনি সেই যুবক তার ভালোবাসার মানুষটাকে অথবা ভালোবাসা পেয়েছিল কি-না। কেবল দেখেছিলাম দিনের পর দিন সে চিঠি রেখে যাচ্ছে আমার কাছে। 

একসময় আমি বুঝতে পারছিলাম আমার বুকের ভেতরের চিঠি খুলে নিতে যে ডাকহরকরা মাঝেমধ্যে আসত সে আর এখন একেবারেই আসছে না। যারা চিঠি দিতে আসত তাদের মধ্য থেকে সেই যুবক ছাড়া আর কেউ চিঠি রাখতেও আমার কাছে আসে না। চিঠি না পেয়ে আমার বুকের ভেতর হাহাকার করত, আমারও খুব কষ্ট হতো। 

আর কেউ না এলেও ঐ যুবক যখন আসত তখন আমার বুকের ভেতরটা জুড়িয়ে যেত। প্রায় প্রতিদিন অন্তত একজন প্রেমিকের হাসি মুখ দেখতে পেতাম যাতে আমার প্রাণ জুড়াত। তার দু'একটা চিঠি পেয়েই সেসব আমি কষ্ট ভুলে থাকতে চেষ্টা করতাম। 
কিন্তু তারপর একদিন সেই যুবকও আমার কাছে আসা বন্ধ করে দেয়। আমি পথের দিকে তাকিয়ে থাকতাম, আর কারও নয় সেই যুবকের জন্য প্রতীক্ষা করতাম। কিন্তু সে আর আসে না, আসেইনি। 

একসময় ভেবে সান্ত্বনা পেতে চেষ্টা করি, সেই যুবক হয়তো তার ভালোবাসার মানুষটাকে ততদিনে কাছে পেয়ে গেছে। যাকে চিঠি লেখে কেউ তাকে পেলে তো আর চিঠি লেখার দরকার পড়ে না। তাই হয়তো সে আর চিঠি লেখেই না। আমি যুবকের দেখা না পেলেও এটা ভেবে সুখ পেতে চেষ্টা করি যে, চিঠি পৌঁছে দিয়ে অন্তত দুটি মনের মানুষকে কাছে এনে দিতে সামান্য সাহায্য করতে পেরেছি। 

কিন্তু আজ যার আঙুলের ছোঁয়ায় আমি জেগে উঠেছি সে স্পর্শ যে আমি ভুলতে পারছি না! বরং আজকের স্পর্শ সেই যুবকের আঙুলের স্পর্শ মনে করিয়ে দিয়েছে। তবে কি সে ফিরে এসেই আমাকে জাগিয়েছে?

আমি ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখতে পাচ্ছি, মধ্যবয়সী একটা মানুষ আমার কাছে দাঁড়িয়ে রয়েছে। একবার আমার দিকে একবার বটগাছের ডালপালা দেখছে। 

আমি তাকে না চিনলেও আন্দাজ করি, লোকটা আমার মতো স্মৃতি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। 

আমিও লোকটার দেখাদেখি বটগাছের ডালপালার দিকে ফের তাকালাম। গাছটা যে এতটা জায়গাজুড়ে ডালপালা ছড়িয়েছে আমি জানতে পারিনি। কখনো খেয়াল করিনি। ফের মনে পড়ে, আমি অনেক বছর ঘুমিয়ে কাটিয়েছি। আমার মনে পড়ে, দীর্ঘ নিদ্রায় নিমজ্জিত হবার আগে আমি এক যুবকের প্রতীক্ষায় ছিলাম। ভাবতাম, আর কেউ না এলেও সে একদিন আমার কাছে আসবে। এমন ভাবনা বুকে নিয়েই আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। তন্দ্রায় ডুবে গিয়েও স্বপ্ন দেখেছিলাম সে একদিন আমার কাছে এসে দাঁড়িয়েছে। তার পর দীর্ঘ ঘুম, তারপর আর কিছু মনে নেই। 

আজ জেগে উঠেছি। জেগে উঠে দেখেছি একটা মধ্যবয়সী লোক আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। তার হাতে একটা চিঠি। তাকে অচেনা ঠেকলেও তার হাতের এমন হলুদ খাম আমার খুব চেনা। আমি কতদিন এমন খাম দেখি না! কতদিন এমন কেউ আমার কাছে এসে দাঁড়ায়নি! 
কে তুমি? আমি জানতে চাই।

লোকটা আমার দিকে তাকায়। বলে, আমাকে চিনতে পারছ না?
লোকটার মুখ ভরতি কাঁচাপাকা দাড়ি। চুল কাঁচাপাকা। চিনতে পারি না তাকে। তার হাতে যে চিঠি সেটা যেন খুব চেনা।
এই যে চিঠিও চিনতে পারছ না?
চিঠি!
তুমি ভুলে গেছ?
কী ভুলে গেছি?
লোকটার মুখে নয় আজ চোখে সেই চেনা অনুরাগের রং দেখতে পাই। 
এত চিঠি তুমি ওকে পৌঁছে দিয়েছ আর সে কথা ভুলে গেছ!

তখন আমার সেই যুবকের কথা মনে পড়ে। আমি চোখ মেলে এই লোকটার দিকে তাকাই। আমি এবার সহজেই তার সঙ্গে সেই যুবককে মেলাতে পারি। তুমি!
চিনতে পেরেছ তাহলে? তুমি তো বেশ আছ। 
বেশ আছি!
তোমার প্রিয়জন কাছে আছে, তোমাকে বুকে জড়িয়ে রেখেছে।

আজই খেয়াল করি, বটগাছটা আমাকে বুকের কাছে খুব অন্তরঙ্গ হয়ে আগলে রেখেছে। এতদিন আমি কিছুই টের পাইনি! বুঝতে পারি, আমি অবচেতনে থাকলেও আমার বন্ধু জেগেই ছিল। সে আমাকে জাগায়নি। লোকটা এসে আজ আমাকে জাগিয়েছে।
আমার মনে পড়ে, অনেক বছর আগে সেই যুবকের লেখা বেশ কিছু চিঠি আমার বুকে জমা হয়ে রয়েছে। সে তখনো জানত না ডাকপিয়ন

আর চিঠি নিতে আসবে না। আমিও তাকে বলতে চাইনি যে ডাকপিয়ন আর আসে না। তুমি আর চিঠি আমার কাছে রেখো না। ভাবতাম, সে কষ্ট পাবে। আরও ভাবতাম সে না এলে আমি কষ্ট পাব। আমি ডাকপিয়ন আসার প্রতীক্ষা না করলেও চাইতাম যুবকটি আমার কাছে আসুক। একদিন সে নিজে থেকেই আসা বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে থেকে গিয়েছিল তার কয়েকটি চিঠি।

লোকটাকে বললাম, আমি তোমার প্রতীক্ষায় ছিলাম।
আমার প্রতীক্ষায় ছিলে?
তুমি যে তোমার ভালোবাসা আমার বুকের ভেতর রেখে চলে গিয়েছিলে, সে তো আমি ছাড়া আর কেউ জানে না।
আমার ভালোবাসা!

তা ছাড়া আর কী? তুমি যেসব চিঠি আমার কাছে রেখে যেতে আমি কি বুঝতে পারতাম না সেগুলোতে কী আছে?
চিঠি তো তোমাকে দিতাম তাকে পৌঁছে দেবার জন্য। সেগুলো তাকে পৌঁছে দাওনি!দুঃখিত। আমি পারিনি। ডাকপিয়ন আর আসত না।
কেন?
তখন ডাকপিয়ন আসা বন্ধ করে দিয়েছিল।
তুমি আমার সেইসব চিঠি এতদিন ধরে রেখেছ কেন? 
তোমার ভালোবাসার ধন আমি কী করে ফেলে দিই? প্রসঙ্গত আমি লোকটাকে জিজ্ঞেস করি, আচ্ছা, এতদিন তুমিই বা কোথায় ছিলে?
ওরা আমাকে আটকে রেখেছিল।
কেন?
যাতে আমি আমার প্রিয়তমাকে কোনো চিঠি লিখতে না পারি। 
কোথায় আটকে রেখেছিল?
জেলখানায়। আর মুক্তি পেয়েই আমি তোমার কাছে চলে এসেছি। কতদিন তাকে চিঠি লিখতে পারিনি! 
তুমি আমার কাছে কেন এসেছ?

তুমি আবার আমার চিঠি তার কাছে পৌঁছে দেবে। অনেকদিন যাবৎ সে আমার চিঠির প্রতীক্ষায় আছে।

আমি লোকটাকে ভালো করে নিরিখ করি। তার পরনে পুরনো ফতোয়া আর পায়জামা জীর্ণ আর ময়লা। চুল উশকোখুশকো, চোখ গর্তে ঢুকে আছে। সে চোখ এদিকে ওদিকে তাকিয়ে কাউকে যেন খুঁজছে। মাঝে মাঝে জিহ্ববা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিচ্ছে। আমি ততক্ষণে লোকটার মনের অবস্থা আন্দাজ করতে পারি। তবুও আমি জানাই, তোমার চিঠি তো আমি আর পৌঁছাতে পারব না!
কেন? সে তো আমার চিঠির প্রতীক্ষায় আছে!

আমি দুঃখিত। আমি পারব না।
কেন এ কথা বলছ?
আমার কাছে তো বহুদিন যাবৎ আর ডাকহরকরা আসে না। 
কেন আসে না?
কেউ এখন আর কাগজে চিঠি লেখে না। 
আমি তো লিখি। এই দেখো।

লোকটার হাতে আমার চেনা হলুদ খাম। দেখে আমার চোখ জুড়িয়ে যায়! কতদিন এমন খাম আমি দেখি না! আমি মুগ্ধ হয়ে তার হাতে ধরা চিঠি দেখতে থাকি। সে চিঠিখানা আমার কাছে রাখতে এসেছে। কিন্তু জানে না তার চিঠি আর কখনো আমি তার প্রিয়জনের কাছে পৌঁছাতে পারব না।আমাকে ক্ষমা করো।

তাহলে ওর কাছে কী করে আমার ভালোবাসা পৌঁছাব? 
এখন অন্তর্জালের যুগ। তুমি ছাড়া আর কেউ কাগজের চিঠি লেখে না, পড়েও না।
আমি তো কেবল কাগজেই চিঠি লিখতে পারি। আর কাগজের চিঠিতেই তো আমার হাতের, আঙুলের, অন্তরের স্পর্শ সে পাবে। অন্তর্জালের চিঠি তো কেউ নিজের মতো করে ছুঁয়ে দেখতে পারে না, কাছে রাখতে পারবে না!  

আমি এই লোকটাকে কী বলতে পারি আপনারাই দয়া করে বলুন। আমি তো অন্তর্জালের যুগে অচল এক পরিত্যক্ত ডাকবাক্স মাত্র, পথের পাশে অকর্মণ্য হয়ে অতীত জীবন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
 



নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর কথাসাহিত্যিক। তাঁর গল্পগ্রন্থের সংখ্যা ৬ টি। ভোরের জন্য প্রতীক্ষা, উত্তরসূরিগণ, রবীন্দ্রনাথ উপমা এবং আমি, মরণ চাঁদের রবীন্দ্রনাথ, মাননীয় মন্ত্রীর জন্য মানপত্র, পুষ্পিত ফাগুন সায়াহ্নের আগুন। উপন্যাস ১২ টি। প্রবন্ধগ্রন্থ ১টি। ছিন্নপত্রে রবীন্দ্রনাথের বাংলাদেশ। গবেষণা গ্রন্থ Traditional Medicine in Bangladesh.
 

menu
menu