দুটি কবিতা ।। বেবী সাউ
আয়না পদাবলী
১
ঘুরেছে সূর্যের মুখ, অপাবৃতা মুখ নিয়ে চাঁদের আড়ালে;
তুমি কি আশ্বাস দেবে কোনওদিন কোথায় জীবন
পূর্বস্মৃতি নিয়ে কেউ এসেছে এ দেশে ফিরে অকল্যাণ মন
যখন জীবনলগ্ন, তুমি কি আর্ধেক চোখ তুলেছ কপালে?
আসমান নিকটে আসে, নীরব ফেনিল জল আকাশে ফোঁপায়।
কে রয়েছ ফাঁকে ফাঁকে, জীবন ঝড়ের মতো পাল তুলে শেষে
এখন বলেছে কথা, কে প্রেমিক, এসো কাছে এসো অবশেষে
খুঁটে খাও বীজমহল, খেটে খাও অন্ধকারে জোনাকি-দোঁহায়।
আমার বন্ধুর হাত কে ছিনিয়ে নেবে জল, তুমি অন্ধকার
আমি জানি এই বীজে যে শস্য আকাশমুখী, তারও আলোকণা
পেয়েছ জীবন, শোনো, একমুখেই এসে পড়ে বহুমুখী ফণা
যখন জীবন তার নীরবতা নিয়ে আসে, আকণ্ঠ পাহাড়
পেরোয় তোমার বাণী, এসো, দূর থেকে কোনও সাঁতারু নাবিক।
যে তুমি ঈশ্বরকণা, যে তুমি আঁধার, তার বাঁশি অলৌকিক।
২
মন, যেন উড়ে গেছে, পড়ে আছে তারাগুলি, অর্ধেক বিদায়
অর্ধেক আহ্বান পাখি, এসো উড়ে, ডানা থেকে ঝরে পড়ে জল
ফানুস বিশ্বের ঘোড়া, সাতরশ্মি ভেসে যায় কোন সে ডানায়
এসেছ পুরাণমাতা, দিগ্বিদিক দুচোখেই গভীর অতল।
আমি এ বিশ্বের চোখে চোখ রেখে দেখেছি সাহস
কে তোমায় রুখে দেবে, কে জানাবে অহিফেন নয় তো এমন
যে জানে বিষের নীল কীভাবে যে ডেকে তোলে জীবন অলস
তাকেও দুহাতে চাই, যেভাবে শিবের চোখে জাগে ত্রিনয়ন।
মন, যেন চতুর্দিক, মনের ভিতরে ডুবে রয়েছ পাহাড়
সে পাহাড়ে কত ভাঁজ, কত যে ক্রিভার্স, তাকে জানি না ঈশ্বর
জেনেছি শুধুই তুমি প্রতিবিম্ব, ভেসে যাও যেখানে আঁধার
আমার আলোর কথা আমাকেই বেছে দেয়্য উলু আর খড়।
মনের ভিতরে মন, তারও কাছে রয়ে গেছে কে তোমার মন
আমি কি তোমার কাছে রয়ে গেছি? জন্ম যার আমারই দর্পণ?
বেবী সাউ কবি, গবেষক, অনুবাদক, ছোটগল্পকার এবং প্রাবন্ধিক। বাংলা, ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি স্কলার। পশ্চিমবঙ্গ সরকার দ্বারা বাংলা আকাদেমি পুরস্কার সহ বিভিন্ন পুরস্কারে পুরস্কৃত।