দুটি কবিতা ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী

জীবাশ্ম দেয়াল
এখনো তোমার ঠোঁটে পুঁতে দিই চারাধান
না বলা আঁচড়গুলো সাহসী হয়েছে
আর শুনিয়েছে
অসময়ে নবান্নের বীজ বেড়ে ওঠার স্মৃতি...
আমাকে চিনিয়ে দাও কখন কোথায় তুমি
এসেছিলে আগের মতো?
বিবস্ত্র জিভেতে তখন গৃহত্যাগীর তকমা—
অভ্যাসে
রাত হলে জোনাকির দিকে ফিরে শোও একা।
কাজলের দাগ
কাজলের মোহ...
ধানমাঠে চুরি করেছ সাপের উষ্ণতা...
খোলস ছাড়বার কথা নেই আর—
যদি বা পোশাক বদলাই রোজকার মতো
তোমার ক্যামেরায় শুধু সেকুলারিজমের বিশ্বাস—
আমি যেদিন ভেদাভেদ করলাম উপান্ত জলরং এ
তখন জানি না কীভাবে
তুমিই রাঙিয়ে দিয়েছ খাঁজকাটা জীবাশ্ম দেয়াল...
চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের ধারণা
রাত বাড়লে ঝনঝন শব্দ
হয়তো পায়ের ওপর পা তুললে অস্বস্তি প্রবল
নাকের পাশে বিষণ্ন মাঝরাতগুলো স্থির
এদের আমি চৌম্বকীয় তত্ত্বের সাথে তুলনা করতাম।
সামিয়ানা খাটিয়ে দৈন্যের প্রমাণ দেয় কে?
তার আগে নৈর্ব্যক্তিক স্রোত ঠেলে সাঁতার দেওয়া সহজ
জন্মজন্মান্তর আগেও স্থলভূমি ভাগ হতো
ঠিক যেমন আজ ভাগ হয় মসজিদের মাটি
ওপরে হাত তুললেই গভীরতা প্রমাণসাপেক্ষ
অনিবার্য ঘুম
গ্রাভিটিলেস উচ্চতায় নিয়ম করে ঝুঁকে পড়ছে ঘাড়
লোকে বলছে শক্ত হচ্ছে ভিত
এদিকে ক্রমাগত দেয়াল বেয়ে উঠছি আমি...
সবটাই কি চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের ধারণা?
কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবি। তাঁর বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাস বিষয়ক তিনটি বই আছে। এছাড়াও কবিতার একক বইয়ের সংখ্যা চারটি। তিনি পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় বসবাস করেন।